অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল সারা বিশ্বের উন্মুক্ত একটি মাধ্যম যেখানে ইনকাম করা যায়।অনলাইনে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করার অনেক কোম্পানি বা প্লাটফর্ম রয়েছে। এমনকি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করার জন্য তেমন কোনো যোগ্যতা অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়না। তাই যে কেউ চাইলেই অনলাইনে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করতে পারে।

বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা আয় করা যায়।এমনকি বাংলাদেশ বসেও আপনারা সরাসরি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রচুর আয় করতে পারবেন। এমনকি বাংলাদেশে থেকে বিদেশি কোম্পানির এফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা আয় করতে পারবেন। তারমানে ঘরে বৈদেশিক কাজকর্মের ডলার ডলার ইনকাম করতে পারবেন। মানুষ দেশ থেকে বিদেশে যায় ডলার আয় করার জন্য।কিন্তু আপনারা ঘরে বসেই বৈদেশিক কাজকর্ম করে টাকা আয় করতে পারছেন ডলার ডলার। বুঝতেই পারছেন বর্তমান এই যুক্তি কতটা মানুষের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। যদিও বর্তমানে ডিজিটাল যুগ কেউ 100 বছর আগে পরিকল্পনাও করি নাই। এমন কি কেউ জানতোই না যে ঘরে বসেই অনলাইনে টাকা ইনকাম করা যাবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল এক ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং। বর্তমান সময়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং খুবই জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেছেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে একজন এফিলিয়েট একটি কোম্পানির পণ্য বা পরিসেবা বিক্রয়ের মাধ্যমে কমিশন নিয়ে থাকে। একজন অ্যাফিলিয়েট তার ওয়েবসাইট অথবা সোশ্যাল মিডিয়া বা ইমেল কমিউনিটি ব্যবহার করে কোম্পানির বিভিন্ন পণ্য প্রচার করে। পক্ষান্তরে কোম্পানির পণ্য বিক্রি বৃদ্ধি পায়। সেখান থেকে কিছু কমিশন অ্যাফিলিয়েট অর্থাৎ যারা অ্যাফিলিয়েট করে তারা পায়। এভাবে এফিলেট মার্কেটিং পরিচালিত হয়।

অনলাইনে অর্থ উপার্জন করার জন্য জনপ্রিয় মার্কেটিং গুলির মধ্যে একটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এখানে খুব সহজে কোন পুঁজি ছাড়া ইনকাম করা সম্ভব। একটু পরিশ্রম করলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রতি মাসে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। মার্কেটিং করার জন্য অবশ্যই আপনাকে কোম্পানি খুঁজে বের করতে হবে। আপনারা বিভিন্ন কোম্পানি থেকে তাদের পণ্য বিক্রয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। নিম্নে আরো বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আপনারা বিভিন্নভাবে শুরু করতে পারেন। তবে আপনি যেভাবে শুরু করেন না কেন আপনাকে মোটামুটি ভাবে পরিশ্রম করতে হবে। বিনা পরিশ্রমে কোনদিনও কোন কিছু করা সম্ভব না। আপনারা অনেকেই ভেবে থাকেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মানে কোন কিছু না করে ইনকাম করা। আপনার যদি ভালো একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকে তাহলে আপনারা সেই ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। অবশ্যই আপনার কনটেন্টগুলো ভালো হতে হবে। তাছাড়া আপনার লিংকের মধ্যে গিয়ে কেউ কখনো কোন প্রোডাক্ট নেবে না। আপনি যে সম্পর্কে কনটেন্ট তৈরি করেন সেই সম্পর্কে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন।
আমরা বর্তমান সময়ে অনেক মানুষ ব্লগিং সাইট ব্যবহার করে থাকি। আমাদের অনেকেরই খুব ভালো ভালো ব্লগিং সাইট রয়েছে। আমরা সেই সকল সাইট গুলোর মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারি। আপনার সাইটে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিজিটর থাকে তাহলে আপনারা এফিলিয়েট মার্কেটিং খুব সহজেই করতে পারবেন ব্লগিং সাইটের মাধ্যমে। আমরা জানি ফেসবুক পেজ থেকে ইনকাম করা সম্ভব। আপনারা হয়তো জানেন না ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ও এফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়।
শুধুমাত্র ফেসবুকে মনিটাইজেশন পেলেই ইনকাম হবে এমনটা না। আপনার পেজ যদি সচল থাকে অর্থাৎ পেজে যদি পর্যাপ্ত ভিজিটর থাকে আপনি যদি ফেসবুক থেকে মনিটাইজেশন না ও পান তবুও আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ফেসবুক পেজ থেকে বিশাল পরিমাণ এমাউন্ট আয় করতে পারবেন। আপনারা টুইটারের মাধ্যমে ও এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। আপনার যদি একটি ভালো টুইটার একাউন্ট থাকে সেখান থেকে আপনারা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করতে পারেন। টুইটার থেকেও আয় করা যায়। তবে টুইটারের মাধ্যমে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ও আয় করা সম্ভব। আপনারা টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে পারেন। আপনাদের অনেকেরই বড় বড় টেলিগ্রাম চ্যানেল রয়েছে। যে সকল চ্যানেলগুলোতে অনেক মেম্বার রয়েছে। সেই সকল মেম্বার গুলোর কাছে আপনাদের লিংক শেয়ারের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে পারেন। এক্ষেত্রেও আপনারা ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

আপনার অবশ্যই ভালো মানের একটি এন্ড্রয়েড ফোন অথবা কম্পিউটার বা ডেস্কটপ থাকতে হবে। অনলাইনে থাকার জন্য অবশ্যই ভালো মানের হাই স্পিডের ইন্টারনেট কানেকশন অথবা ওয়াইফাই কানেকশন থাকতে হবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে অবশ্যই কোন প্লাটফর্মে যুক্ত হতে হবে। সেই কোম্পানিতে বা ওয়েবসাইটের যুক্ত হবেন যেখানে আপনার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়ের সুযোগ দেয়। যে ওয়েবসাইটে বা প্ল্যাটফর্মের যুক্ত হবেন সেটা অবশ্যই যেন বিশ্বস্ত হয়। নিজের ইচ্ছেশক্তি, পরিশ্রমই, ধৈর্যশীল, সততা ইত্যাদি গুন থাকতে হবে। উপরোক্ত জিনিস এবং গুন গুলো খুবই প্রয়োজন আপনি যদি অনলাইনে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করতে চান তাহলে। যেহেতু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করা যায় নির্দিষ্ট কোনো পণ্য গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে।এবং গ্রাহকেরা পণ্যগুলো ক্রয় করলে কোম্পানি থেকে কমিশন আসে।এখন সে কমপানি আপনার প্রতিটা প্রোডাক্ট বা পণ্য বিক্রি হলে তার বিনিময়ে কিছু কমিশন দিবে। প্রতিটা প্রোডাক্টের জন্য আলাদা আলাদা কমিশন কোম্পানিরা দিয়ে থাকে। 1000 টাকার একটি পণ্য আপনি তাদের কোম্পানি থেকে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছেন। এখন এই কোম্পানি আপনাকে এই পণ্য বিক্রি করার জন্য হয়তো কমিশন দিতে পারে 10% তাহলে, আপনার একাউন্টে জমা হবে 100 টাকা। এখন আপনি যদি ওই সময়ে 10000 টাকার পণ্য নির্দিষ্ট গ্রাহকের কাছে বিক্রি করতে পারেন তাহলে, এই কোম্পানি থেকে আপনার 10% কমিশন হিসেবে 1000 টাকা দিবে। তাহলে চিন্তা করুন আপনি যদি আরো বেশি দামি পণ্য বিক্রি করতে পারেন তাহলে তত বেশি কমিশন পাবেন।

ঠিক এভাবে করেই আপনারা প্রতিটি প্রোডাক্টের জন্য আপনার একাউন্টে টাকা পেতে থাকবেন। এখন যদি বলেন ভাই কত টাকা প্রতি মাসে ইনকাম করা যাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে তাহলে, আমি বলব নির্দিষ্ট কোন অ্যামাউন্ট নেই যেটা আপনি আফিলিয়েট মারকেটিং করে ইনকাম করতে পারবেন। আপনি যদি আজকে 10000 টাকার পণ্য বিক্রি করতে পারেন তাহলে সেই হিসেবে কিছু কমিশন পাবেন।কিন্তু আগামীকাল যদি 20 হাজার টাকার পণ্য গ্রাহকের কাছে বিক্রি করেন তাহলে সেই হিসেবে কমিশন পাবেন। এই হিসেব করেই আমরা বলতে পারি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন সেটা নির্ভর করবে আপনার উপর।আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য যত এক্সপার্ট তত ইনকাম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। তবে হয়তো শুরুর দিকে আপনার ইনকাম কম আসবে। কিন্তু আস্তে আস্তে প্রতি মাসে হয়তো আপনি লাখ টাকার উপরে ও ইনকাম করতে পারবেন।শুধুমাত্র অনলাইনে ঘরে বসে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেই।

অবশই মনে রাখবেন, সব সময় এমন একটি প্রোডাক্ট বা সামগ্রীর বাছাই করবেন যার চাহিদা আছে। উদাহরণ স্বরূপে, ডোমেইন এবং হোস্টিং এর চাহিদা অনেক। কারণ আজ লোকেরা নিজেদের ব্যবসা অনলাইন নিয়ে আসতে চান, এবং তার জন্য তারা ডোমেইন বা হোস্টিং অবশই কিনতে চাবেন। এছাড়া, অনেক রকমের অনলাইন কোর্স গুলোর চাহিদাও বর্তমানে প্রচুর। এর বাইয়ারে, যেগুলি product সহজে বিক্রি হতে পারে এবং যেগুলিতে কমিশন ভালো, সেগুলি মার্কেটিং করার চেষ্টা করুন। Affiliate marketing, বর্তমান সময়ে ঘরে বসে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার একটি অনেক লাভজনক মাধ্যম। বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার লোকেরা এই কৌশল ব্যবহার করে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে নিচ্ছেন। তবে হ্যা, আপনাকে শুরুতে সময় দিতে হবে এবং বিষয়টি নিয়ে খুঁটিনাটি জানতে হবে। এফিলিয়েট প্রোডাক্ট গুলো কিভাবে সিলেক্ট করতে হয় এবং কি কি উপায়ে সহযে প্রচার করে সেল/লিড পাওয়া সম্ভব, এগুলো ভালো করে বুঝতে হবে।

শেষ কথা:

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বর্তমানে অনলাইনে আয়ের অন্যতম কার্যকর এবং জনপ্রিয় মাধ্যম। এটি যেকোনো বয়সের বা পেশার মানুষ ঘরে বসে শুরু করতে পারেন, এবং কিছুটা ধৈর্য ও কৌশলগত প্রচেষ্টায় আপনি উল্লেখযোগ্য আয় করতে পারবেন। মূলত, একটি নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম বেছে নিয়ে সঠিক পণ্যগুলোকে প্রোমোট করা এবং নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম (যেমন ব্লগ, ইউটিউব, ফেসবুক) ব্যবহার করা সফলতার চাবিকাঠি। সময়ের সাথে সাথে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ভাল পণ্য নির্বাচন করে মাসিক আয়ের পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব। ধৈর্য ও দৃঢ়তায় নিয়মিত চেষ্টা করলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে স্থিতিশীল আয় সম্ভব।

Related Post