ব্লগকে বিভিন্ন উপায়ে মনিটাইজ করা যেতে পারে। আপনার ব্লগ থেকে টাকা উপার্জনের জন্য অনলাইন উপার্জন সংক্রান্ত বিভিন্ন মডেল এবং সেরা পদ্ধতিগুলি দেখুন। আপনার যদি কোনও ব্লগ বা সাইট থাকে – বা এইরকম কিছু শুরু করার কথা ভেবে থাকেন – তাহলে জেনে রাখুন যে আপনার কাছে এখনও উপার্জন করার সুবিধা আছে।

ব্লগকে বিভিন্ন উপায়ে মনিটাইজ করা যেতে পারে। এই নিবন্ধে অনলাইনে উপার্জন সংক্রান্ত বিভিন্ন মডেল এবং ডিজিটাল কন্টেন্ট মনিটাইজ করার সেরা পদ্ধতিগুলির কথা বলা আছে। সহজভাবে বলতে গেলে মনিটাইজেশনের অর্থ হল আপনার সাইট থেকে টাকা উপার্জন করা। আপনি নিজের ব্লগে অনলাইন কন্টেন্ট থেকে উপার্জন করলে সেটিকে মনিটাইজেশন বলা হবে। আপনার ব্লগ থেকে টাকা উপার্জন শুরু করার জন্য, এখানে বেশ কিছু অনলাইন ব্যবসায়িক মডেল আছে: বিজ্ঞাপন, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, সরাসরি বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রোডাক্টের অফার, সাবস্ক্রিপশন, কোচিং মনিটাইজেশনের প্রতিটি মডেলকে খুব ভাল করে বুঝে নেওয়া যাক। ব্লগিং থেকে অর্থ উপার্জনের কোন সীমা নেই। এটা নির্ভর করে আপনি কোন উপায়ে অর্থ উপার্জন করছেন তার উপর। মানে অ্যাডসেন্স, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা অন্য কিছু। অনেকে এইগুলো একসাথে ব্যবহার করে, এজন্য তারা প্রচুর অর্থ উপার্জন করে। বেশির ভাগ বাংলা ব্লগে প্রতি মাসে ১০০-২০০ ডলার বা ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা আয় হয়। তবে অনেকেই মাসে ১০০০ ডলার বা লাখ টাকার বেশি আয় করেন। ইংরেজি ব্লগে আয়ের পরিমান বেশি, তাই বাংলাদেশে বেশির ভাগ ব্লগার ইংরেজি ভাষায় ব্লগিং করে থাকেন। ইংরেজি ব্লগ থেকে বেশীর ভাগ মানুষ ৩০০ থেকে ৫০০ ডলার বা ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার আয় করেন । বলা বাহুল্য অনেক প্রো - ব্লগাররা একাধিক সাইট থেকে ১০০০০+ ডলার ইনকাম করছেন। কিন্তু আমার এই পোস্টগুলো নতুন ব্লগারদের জন্য। প্রো - ব্লগাররা সবকিছু জানেন। নতুন ব্লগাররা শুধুমাত্র গুগল অ্যাডসেন্স সম্পর্কে জানেন।

অতএব, এটিকে ভিত্তি হিসাবে বিবেচনা করে, আমরা ব্লগিং থেকে কত আয় করা যায় তা জানার চেষ্টা করব। আমরা যখন একটি ব্লগ তৈরি করি, তখন তাতে ভালো তথ্য শেয়ার করি। মানুষেরা আমাদের ব্লগে সেই তথ্য পড়তে আসে, যাকে ট্রাফিক বা ভিজিটর বলি। এই ভিজিটররাই আয়ের উৎস এবং এবং তাদের উপর নির্ভর করে ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে কত টাকা আয় করতে পারব। এই বিশ্বের সমস্ত ব্লগারদের মধ্যে, 80% এরও বেশি ব্লগারের আয়ের প্রধান উৎস হল গুগল অ্যাডসেন্স এবং এর মতো advancement network. এবং যখনই কেউ তার নতুন ব্লগ শুরু করে, তখন সে স্টার্টিং-এ এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারে। Google AdSense আপনার ওয়েবসাইটে তার বিজ্ঞাপন দেখায়। মানুষেরা যখন সেই বিজ্ঞাপনগুলিতে ক্লিক করে, তখন আপনি অর্থ প্রদান করেন। এর মানে হল যে যত বেশি মানুষ আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করবে, তত বেশি "ক্লিক" পাবেন। এবং আপনার যত বেশি "ক্লিক" হবে, তত বেশি অর্থ আপনি উপার্জন করতে সক্ষম হবেন। তাই আমি বলতে চাচ্ছি যে আপনার ব্লগের আয় নির্ভর করবে আপনার ট্রাফিকের উপর। ব্লগ থেকে কত টাকা আয় করা যায় তার উত্তর দেওয়ার আগে আমি আপনাকে কিছু বিষয় ব্যাখ্যা করতে চাই।

ব্লগিং-এ আয়ের উপায় যেমন ট্রাফিকের উপর নির্ভর করে, তেমনি আরও অনেক কারণ রয়েছে যা গুরুত্বপূর্ণ, যার উপর উপার্জন নির্ভর করে। একইভাবে ব্লগের ভাষাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা ব্লগিং-এ CPC খুবই কম, 0.01 থেকে 0.12 $ পর্যন্ত। যেখানে আপনি যদি ইংরেজি ব্লগিং করেন তবে আপনি প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারেন। কারণ ইংলিশ ব্লগ অনেক বেশি সিপিসি পায়। প্রতি ক্লিকে 0.10 থেকে 0.50 ডলার পর্যন্ত। আপনি যদি প্রতিদিন 100টি ক্লিক পান, তাহলে আপনার উপার্জন হবে প্রতিদিন $10 থেকে $50। বাংলা এবং ইংরেজি ব্লগিংয়ের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। একইভাবে, আপনি যে দেশ থেকে ক্লিক পান সেটিও আপনার উপার্জনের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এফিলিয়েট মার্কেটিং এমন এক অনলাইন মার্কেটিং এর প্রক্রিয়া যেটা করে আপনারা ব্লগ থেকে একেবারেই ভালো পরিমানে আয় করতে পারবেন। কিন্তু, এখানেও আপনার ব্লগের ট্রাফিক বা ভিসিটর্স অধিক হতে হবে। এফিলিতে মার্কেটিং কি, এই ব্যাপারে আগেই আমি আপনাদের বুঝিয়ে বলেছি। এই মাধ্যমে আপনাদের, বিভিন্ন ডিজিটাল প্রোডাক্ট digital product যেমন, domain, hosting, website theme, software আবার বিভিন্ন online e-commerce ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট গুলি, নিজের ব্লগের visitors দেড় কাছে মার্কেটিং কোরে সেগুলি affiliate link এর মাধ্যমে কেনার জন্য বলতে হবে। এবং, যদি আপনার ব্লগের ভিসিটর্সরা সেই প্রোডাক্ট গুলি কিনেন, তখন আপনি একটি ভালো সংখ্যার কমিশন পেয়ে যান। ইন্টারনেটে বিভিন্ন এরকম company রয়েছে, যেগুলি এফিলিয়েট মার্কেটিং দ্বারা নিজের product বা service প্রোমোট বা মার্কেটিং করেন। এবং আপনারা সেই কোম্পানি গুলির প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এর ব্যাপারে নিজের ব্লগে লিখে এবং promotion কোরে, টাকা আয় করতে পারবেন।

এমনিতে, ব্লগে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা উপার্জনের জন্য Google adsense সেরা। কিন্তু, অনেক সময় অনেক ব্লগ গুগল এডসেন্সের জন্য অনুমোদন পায়না। ফলে, বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ব্লগ থেকে ইনকামের সহজ প্রক্রিয়াটা তারা ব্যবহার করতে পারেনা। যখন আপনার একটি ব্লগ থাকবে তখন তাতে প্রত্যেকদিন হাজার হাজার নতুন লোকেরাও আসবেন ব্লগের আর্টিকেল পড়ার জন্য। এক্ষেত্রে, লোকেদের প্রয়োজন এবং ইন্টারেস্টের কথা ভেবে আপনি তৈরি করতে পারেন একটি e-book. এবং তারপর নিজের ব্লগের ভিসিটর্স দেড় কাছে সেই e-book বিক্রি করতে পারবেন। আপনি নিজের experience এবং knowledge এর ব্যবহার কোরে, একটি কোর্স তৈরি করতে পারেন। যেমন, ব্লগিং কোর্স বা যেকোনো কম্পিউটার কোর্স। একটি ব্লগ তৈরি করার পর আপনার কাছে “paid guest posting” এর মাধ্যমে টাকা আয় করার সুযোগ থাকে। Guest posting মানে হলো, এমন এক প্রক্রিয়া যেখানে অন্য অন্য ব্লগাররা অন্য ব্লগ গুলিতে আর্টিকেল লিখে। এবং আর্টিকেল লিখার সময় এক বা দুইবার তাদের নিজের ব্লগের “Url address” সেই আর্টিকেলে দিয়ে দেন। এতে, ব্লগাররা নিজের ব্লগের মার্কেটিং বা প্রচার আপনার ব্লগের মাধ্যমে করেন এবং আপনার ব্লগের থেকে কিছু সংখক ট্রাফিক বা ভিসিটর্স তাদের ব্লগে যায়। তাছাড়া, গেস্ট পোস্টিং এর এক অনেক গুরুত্বপূর্ণ লাভ হলো “backlink” তৈরি করা।

গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে বেশি ট্রাফিক বা ভিসিটর্স পাওয়ার জন্য আপনার ব্লগের ব্যাকলিংক এর সংখ্যা অধিক হতে হবে। এবং, guest posting করে ব্লগাররা নিজের ব্লগের quality backlink অনেক বেশি পরিমানে বাড়িয়ে নিতে পারবেন। তাই, আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের যদি একটি ব্র্যান্ড তৈরি করতে পারেন বা আপনার ব্লগ যদি জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে অনেক সহজেই অন্য ব্লগার দেড় থেকে টাকা নিয়ে তাদের আপনার ব্লগে একটি গেস্ট পোস্ট করার অনুমতি দিতে পারবেন। নিজের একটি সফল ব্লগ তৈরি করার পর “direct paid promotion” করাটা অনেক বেশি লাভজনক হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। কিন্তু প্রথমেই আপনার ভালো ভাবে quality article নিজের ব্লগে লিখতে হবে এবং সেগুলি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রোমোট করতে হবে। তারপর, যখন কিছু ম্যাশ পর আপনার ব্লগে ভালো পরিমানে ট্রাফিক ও ভিসিটর্স আসবে, তখন এই paid promotion এর কাজ শুরু করতে পারবেন। মানে, যখন আপনার ব্লগ অনেক বেশি জনপ্রিয় এবং famous হয়ে দাঁড়াবে তখন বিভিন্ন বড়ো বড়ো কোম্পানিরা তাদের product বা services এর প্রোমোশনের জন্য আপনার কাছে আসবে। এবং কিছু ক্ষেত্রে, আপনিও বিভিন্ন কোম্পানির কাছে গিয়ে নিজের ব্লগে তাদের প্রোডাক্ট গুলি প্রমোশন করার প্রস্তাব নিয়ে যেতে পারবেন।
এতে, আপনারা আর্টিকেলের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির product ও services এর প্রমোশন বা মার্কেটিং করতে পারবেন এবং যার ফলে সেই কোম্পানি গুলির থেকে আপনি ভালো টাকা নিয়ে নিতে পারবেন। একটি ব্লগ থেকে ভালো পরিমানে আয় করার জন্য সবচে আগেই আপনার ব্লগে ভালো সংখ্যায় ট্রাফিক বা ভিসিটর্স থাকতে হবে। ট্রাফিক বা ভিসিটর্স একজন ব্লগারের জন্য সবকিছু। এবং, ব্লগে ভালো পরিমানে ট্রাফিক থাকলে, আপনারা বিভিন্ন মাধ্যম বা উপায় ব্যবহার কোরে ইন্টারনেট থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

শেষ কথা:

ব্লগ থেকে অর্থ আয় করার জন্য বিভিন্ন লাভজনক উপায় রয়েছে, যা আপনাকে সঠিকভাবে ব্লগ মনিটাইজ করতে সাহায্য করবে। গুগল অ্যাডসেন্স, এফিলিয়েট মার্কেটিং, ই-বুক ও কোর্স বিক্রি, গেস্ট পোস্টিং, এবং সরাসরি প্রোমোশনের মাধ্যমে আপনি আয় বাড়াতে পারবেন। ব্লগের ট্রাফিক, বিষয়বস্তুর মান, এবং সঠিক মনিটাইজেশন কৌশল ব্লগিংয়ের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

Related Post